ঘুঘু পাখির রোগ ও চিকিৎসা পর্ব - ৩
পোস্ট Nov 18, 2020 | দেখা হয়েছে: 1958
ঘুঘু পাখির জ্বর হলে করণীয়:
◆ ঘুঘু পাখির জ্বর :-
প্রাণী দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রা হওয়াকে জ্বর বলে ৷ ঘুঘু পাখির জ্বর সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারনা আছে ৷ ঘুঘু পাখির জ্বরকে আমরা মানুষের জ্বরের সাথে তুলনা করে থাকি ৷ মেপে হোক আন্দাজে হোক ১০০ ফারেনহাইট হলেই সেটা মানুষের জ্বর হতে পারে, ঘুঘু পাখির না ৷ ঘুঘু পাখির দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হল ৯৮.৫ থেকে ১০৯.৪ ফারেনহাইট ৷ গড়দাড়ায় ১০৫ ফারেনহাইট ৷ ঘুঘু পাখির স্বাভাবিক হৃদ স্পন্দন ১৮৫ বিপিএম ৷ সাধারণত ডিম দেবার পর মেয়ে ঘুঘু এবং বাচ্চা খাওয়ানোর সময় মেয়ে ও পুরুষ ঘুঘু উভয়ই জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে ৷
◆ কারন:-
1. সুষম খাদ্য, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের ঘাটতির ফলে স্নায়ুতন্ত্র দেহেরতাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে ৷
2. রক্তে কোন জীবাণুর প্রবেশ ৷
3. ফাঙ্গাস বা খাবারের বিষক্রিয়া ৷
4. অহেতুক এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ ৷
5. একাধিক এন্টিবায়োটিক বা ঔষুধের বিক্রিয়া ৷
6. হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তন ৷
7. বেশি গরম ও ঠান্ডা ৷
8. স্যাতস্যাতে পরিবেশ ৷
9. আঘাত জনিত কারনে ৷
10. ঘন ঘন ডিম বাচ্চা করালে ৷
◆ লক্ষন•
1.শরীরের তাপমাত্রা ১০৭ ফারেনহাইট বা তার চেয়ে বেশি হবে ৷
2. লোম ফুলিয়ে মাথা গুঁজে ঝিমানো ৷
3. কাপুনি ভাব থাকতে পারে ।
4.ঘন ঘন শ্বাস নিবে।
5.পাখা ঝুলে যাবে ও লেজ নামান থাকবে।
6.ঠোঁট ও মুখ সাদা ফ্যাকাসে বা প্যাংসেটে ভাব বা লাল হতে পারে।7.বমি ভাব থাকতে পারে।
8.মুখে বা বমিতে টক গন্ধ থাকতে পারে।
9.পায়খানা সবুজ সাদা বা সবুজ পাতলা বা সাদা পানির মত হতে পারে।
10. বাতাস, ঠান্ডা, আলো পছন্দ করবে না। খাঁচার এক কোনে পা তুলে বা চুপ করে বসে থাকবে অথবা খাঁচার মেঝেতে বসে থাকতে পারে।
11.দূর্বলতার কারনে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে উল্টে পরে যেতে পারে, কারও সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে পারে ৷
12.আঘাত পা প্রদাহ জনিত হলে সেই জায়গায় ঠোঁট দিয়ে বার বার চুলকান বা সে নিজে মুখ ঘষার চেষ্টা করবে।
13. হটাত বাচ্চা খাওয়ান বন্ধ করে দিতে পারে বা ডিমে তা দিয়া বন্ধ করে দিতে পারে।
14.অনেক সময় এই রোগ থেকেই ক্যানিবলিজম রোগের সৃষ্টি হতে পারে আর তা হলে ঘুঘুদের বাবা-মা বাচ্চাদের লোম তুলে রক্ত সহ খেতে দেখা যায়।
◆ চিকিৎসা:-
সঠিক রোগের ধরার জন্য হলেও জ্বর কেন হল তা জানা খুব জরুরি ৷ সঠিক কারন না জানলে সঠিক চিকিৎসা দেয়া সম্ভব না ৷
1. খনিজ উপাদানের ঘাটতির কারনে জ্বর হলে CALFIL ট্যাবলেট অর্ধেক করে দিনে দুই বার, অথবা CALFIL ইঞ্জেকশন ৩/৪ মিলি করে একবার, পাঁচ দিন৷
অথবা• calim হাফ গ্রাম + হাফ গ্রাম স্যালাইন ৫ মিলি পানিতে মিশিয়ে দুই/তিনবার, সর্বোচ্চ ৫ দিন ৷
2.হালকা কাপলে, সাথে বমি হলে Noret Fevia দুই ফোটা করে দিনে ৩/৪ বার, ৫ দিন ৷
3.কাটা ছেঁড়ার কারনে জ্বর হলে, fevnone ২ ফোটা করে দিনে ৩ বার, ৪/৫ দিন ৷
4. কোন কারনে ব্যাথা পাবার কারনে জ্বর হলে, painofev ২ ফোটা করে দিনে ৩/৪বার, ৪/৫ দিন ৷
•5.শুধু ব্যাথা উপশমে paine'er দুই ফোটা ঘাড়ে দিলে উপকার পাওয়া যায় ৷
সতর্কতা :-
• ঘুঘু পাখির জ্বর হলে অনেকে প্যারাসিটামল খাওয়ান ৷ এটা ভুল চিকিৎসা ৷ প্যারাসিটামল প্রয়োগের ফলে ঘুঘুর কিডনি ও লিভারের মারাত্বক ক্ষতি হয় ৷
মনে রাখবেন একি রোগের ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসা আছে ۔ এবং খুব বেশি ভালো হয় আপনার নিকটস্থ ভেটেনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পাখির চিকিৎসা করা l
0 comments on ঘুঘু পাখির রোগ ও চিকিৎসা পর্ব - ৩
Please sign in so you can post a comment.