ঘুঘু পাখির রোগ ও চিকিৎসা পর্ব - ৪

পোস্ট Nov 18, 2020 | দেখা হয়েছে: 4055
ঘুঘু পাখির স্পেন্ডল লেগস বা পা বাঁকা রোগ:
ঘুঘু পাখির স্প্রেডল লেগস রোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। স্প্রেডল লেগস হলে পা দুটো ২ পাশে ছড়িয়ে থাকবে। এ রোগ হলে ঘুঘু পাখি তার দুই পায়ে দাড়াতে পারবে না, হাটা-চলা করতে পারবে না প্রায় অকেজো হয়ে পরবে। আসুন জেনে নেই ঘুঘু পাখির স্প্রেডল লেগস রোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে-
স্প্রেডল লেগস রোগের কারণঃ
1. ডিমে তা দেয়ার সময় যথাযথ আদ্রতা বজায় না থাকলে অনেক ক্ষেত্রে পায়ের মাসল সঠিকভাবে গঠিত হয় না, তখন বাচ্চা জন্মগত ভাবে এ সমস্যা নিয়ে বড় হতে থাকে।
2. ক্যালসিয়ামের অভাবে পায়ের হাড্ডি ছোটবেলায় ঠিকমত শক্ত না হলে এমন হতে পারে। ভিটামিনের অভাবে হলে বেশিরভাগ সময় শুধু এক পা ছড়িয়ে থাকে।
3. জন্মের পর যদি মা, বাবা বা ভাই-বোন অতিরিক্ত চাপ দিয়ে বাচ্চার উপরে বসে থাকে। তাহলে চাপের কারনে বাচ্চা ঠিকমত তার পা সোজা করার সুযোগ পায় না।
4. চলাফেরা করা শিখতে হয় বাচ্চাদের ১৮ দিনের মধ্য। এই সময়ে বাচ্চাদের হাড়ি বা বাক্সে নড়াচড়া করা প্রয়োজন। পা দিয়ে জিনিসপত্র ধরে রাখার সুবিধা না পেলে পায়ের আঙ্গুল ঠিকমত শক্ত হতে পারবে না।
5. যদি হাড়ি বা বাক্স পিছলা হয়। পিছলা জিনিষে বাচ্চারা দাড়াতে পারবে না। চেষ্টা করলেই পিছলে পড়ে যাবে, যার ফলে হাটা-চলার অসুবিধা হবে ও পা ছড়িয়ে থাকবে।
6. অন্য কোন কারনে নিয়মিত পায়ের ব্যায়াম না হলে এবং বাচ্চার পা দুই পাশে ছড়িয়ে থাকলে সেই হাড্ডির বয়েস বেড়ে শক্ত হতে থাকে। বাকা পা শক্ত হলে সেই পা আর ঠিক করা সম্ভব হয় না।
7. বাবা মার ক্যালসিয়াম ও যাবতীয় ভিটামিনের অভাব হলে ডিম পরিপূর্ণ উর্বর হয় না এবং এই প্রভাব বাচ্চার উপরে পড়ে l
স্প্রেডল লেগস রোগ প্রতিরোধঃ
1.শক্তিশালী মাসল ও হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামযুক্ত সুষম খাবার প্রদান ।
3.পিছলা হাড়ি বা বাক্স ব্যাবহার করা যাবে না। হাড়িতে ছালা বা কাঠের তুষ দিতে পারেন যাতে সহজে দাড়াতে পারে বা পা ছড়িয়ে না রাখে ।
4.বাচ্চা ঘুঘু অনেক্ষন মেঝে বা ফ্লোর এ রাখা যাবে না ।
বাচ্চাদের বয়স ১৩ দিন হওয়ার পড়ে নিয়মিত তাদের পা দেখবেন। পায়ে যদি পায়খানা লেগে থাকে, তাহলে পরিষ্কার করতে হবে, নইলে শক্ত পায়খানা হাড্ডি ঠিকমত বড় হতে দিবে না। কুসুম-গরম পানিতে টিশু ভিজিয়ে পায়ে হাল্কা চাপ দিয়ে পায়খানা পরিষ্কার করে দিবেন।
5.বাচ্চার মা বাবা ডিম পাড়ার সময় হলে প্রয়োজনীয় ভিটামিন সরবরাহ করবেন l
স্প্রেডল লেগস রোগের চিকিৎসাঃ
কম বয়স থাকাকালীন চিকিৎসা শুরু করলে অনেক দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু বাচ্চা বড় হয়ে হাড় শক্ত হয়ে গেলে তা ঠিক হয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
১ম পদ্ধতিঃ
পায়ের গোড়ালি ও হাটুর মাঝের স্থানে স্টিকি ব্যান্ডেজ দিয়ে এমনভাবে পেচিয়ে দিতে হবে যাতে বাচ্চা নিজ পায়ের উপর ভর করে দাড়াতে পারে এবং নাড়াচাড়া করতে পারে। ব্যান্ডেজ যাতে দুই পাকে বেশি কাছাকাছি নিয়ে না আসে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
২য় পদ্ধতিঃ
মেক-আপ এর স্পঞ্জ কেটে নিয়ে, নির্দিষ্ট জায়গায় দুটি ছিদ্র করে পাখির পা দুটো ঢুকিয়ে দিতে হবে। এভাবে বাচ্চাকে ১-২ সপ্তাহ দেখাশুনা করতে হবে। হাড্ডি শক্ত হলে যখন মেক-আপ স্পঞ্জ পড়েও পাখি দাড়াতে পারবে, তখন স্পঞ্জ থেকে তার পা বের করে দিতে হবে।
৩য় পদ্ধতিঃ
একটি নরম চুল বাধার ব্যান্ড নিয়ে স্ট্র ছোট করে কেটে সেটার ভিতর দিয়ে ব্যান্ড ঢুকিয়ে দুই কোনার ভিতর দিয়ে দুই পা ঢুকিয়ে দিতে হবে। স্ট্র এমন ভাবে কাটতে হবে যাতে বাচ্চার পায়ে তা ঘষা না খায়।
প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করলে ২-৩ দিনেই বাচ্চা সুস্থ হয়ে নিজেনিজে সঠিকভাবে হাটা শুরু করতে পারবে, অন্যথায় ১-২সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
৪র্থ পদ্ধতিঃ
অনেক সময় বাচ্চা কবুতর এর পায়ের আঙুল বেকে যায় যা আঙুল আলাদা ব্যান্ডেজ করে সোজা কোণো পাইপ জাতীয় ফ্রেম এ ভরে কিছু দিন রাখলে অনেক সময় ভালো ফল পাওয়া যায় । এদের কে একটু আলাদা করে বা আলাদা খাঁচায় রাখতে হবে ।
সতর্কতা :-
চিকিৎসা দিতে দিয়ে ধৈর্য হারানো যাবে না l পায় অতিরিক্ত চাপ দেয়া যাবে না আর বার বার পায়ের টেপ , স্পনস বা ফ্রেম খুলে দেখা যাবে না l মনে রাখবেন একি রোগের একাদিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা হয় তাই বিভ্রান্ত হবেন না প্রয়োজনে আপনার নিকটস্থ ভেটেনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন l
0 comments

0 comments on ঘুঘু পাখির রোগ ও চিকিৎসা পর্ব - ৪

Please sign in so you can post a comment.

EBIZNAS.COM

User since: Aug 31, 2017
See all ads »

+8********Show phone
+8********Show WhatsApp

অনুরূপ বিজ্ঞাপন

Go to top
This site uses cookies. By continuing to browse the site, you are agreeing to our use of cookies. Read more about our cookie terms.
রিমোভ